Monday, 19 February 2018

কম্পিউটারের সমস্যা সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর


০১৷ প্রশ্নঃ ইন্টারনেট মডেম-এ নেটওয়ার্ক সমস্যা হচ্ছে৷
উত্তরঃ জিপিআরএস বা এজ মডেমে নেটওয়ার্কের এই সমস্যা হলে-
মডেম সব সময় উন্মুক্ত স্থানে রাখা। কেননা এর উপর নেটওয়ার্ক নির্ভর করে।
সীমটি ট্রে থেকে খুলে আবার লাগিয়ে কানেক্ট দিয়া। অনেক সময় মডেম ঠিক মতো সীম কানেকশন না পাবার কারনেও নেট সমস্যা করে থাকে।
ড্রাইভার নতুন করে ইন্সটল করে দেখা।
মডেম কেনার সময় ভাল করে জেনে নিয়া, এই মডেম উইন্ডোজ এক্সপি, ভিসতা, সেভেন বা লিনাক্স সাপোর্ট করে কিনা এবং সংশ্লিষ্ট সব ড্রাইভার সাথে দেয়া আছে কিনা।
০২৷ প্রশ্নঃ ইন্টারনেট সংযোগে ধীরগতি৷

উত্তরঃ যদি মোবাইল ইন্টারনেট মডেম ব্যবহার করে ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করে থাকে, তাহলে সেটা নেটওয়ার্কের উপর ভিত্তি করে কিছুটা ধীর হতে পারে। এজন্য মডেম সব সময় উন্মুক্ত স্থানে রাখা। কেননা এর উপর নেটওয়ার্ক নির্ভর করে।
আর একই সাথে মডেমের বদলে মোবাইল হ্যান্ডসেটকে মডেম হিসেবে ব্যবহার করলে বেশি গতি পাওয়া সম্ভব। কেননা মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক গ্রহণ করার ক্ষমতা মডেমের চেয়ে বেশি।
আর কম্পিউটারে ডাউনলোড করার সময় ব্রাউজ করা থেকে বিরত থাকবে।
০৩৷ প্রশ্নঃ কম্পিউটার হার্ডডিস্ক পাচ্ছে না৷
উত্তরঃ অনেক সময় কম্পিউটার চালু হবার সময় হার্ডডিস্ক এরও দেখায়। এর কারণ হতে পারে-
মাদারবোর্ড হার্ডডিস্ক পাচ্ছে না। প্রথমেই নিশ্চিত হাওয়া হার্ডডিস্কের পাওয়ার ক্যাবল ঠিক আছে কি-না। তারপর হার্ডডিস্ক থেকে মাদারবোর্ডের ডাটা ক্যাবল চেক করা।
হার্ডডিস্কের পেছনের পিন ঠিক আছে কিনা দেখা।
বায়োসের সেটিংসের কারণেও সমস্যা হতে পারে। বায়োসে গিয়ে দেখা হার্ডডিস্ক পাওয়া যাচ্ছে কিনা।
হার্ডডিস্কে ব্যাড সেক্টর থাকলেও এমনটা হতে পারে।
০৪৷ প্রশ্নঃ উইন্ডোজে আপডেটিং জনিত সমস্যার সমাধান৷
উত্তরঃ উইন্ডোজ এক্সপি, ভিসতায় এবং সেভেনে অটোমেটিক আপডেটিং একটি গুরুত্বপূর্ণ ফিচার। এর মাধ্যমে উইন্ডোজ নিজে থেকে ইন্টারনেট থেকে অপারেটিং সিস্টেম, অ্যাপ্লিকেশন ও হার্ডওয়্যারের জন্য প্রয়োজনীয় আপডেট ডাউনলোড করে থাকে। পাশাপাশি সিকিউরিটি সিস্টেমও আপডেট হয় এভাবে৷ তবে অনেক সময় আপডেট পিসির স্ট্যাবিলিটি নষ্ট করে দিতে পারে। যেমন আপডেট করে পিসি রিস্টার্ট করার পর এরও মেসেজ, পিসি স্লো হয়ে যাওয়া, হ্যাং করা ইত্যাদি। তখন প্রয়োজন পড়বে সাম্প্রতিক আপডেটটি ডিলিট করে ফেলার।
এখন আপডেট কিভাবে আনইন্সটল করা হয়। সব ওএস এর নিয়ম প্রায় একই।
এখনে ভিসতার পদ্ধতি অনুসরণ করছি।
কন্ট্রোল প্যানেল থেকে প্রোগ্রামস এন্ড ফিচারস এ যেয়ে, বাম পাশের টাস্কস মেনু থেকে ভিউ ইন্সটলড আপডেটস-এ ক্লিক করা৷ এখানে যে সমস্ত আপডেট ডাউনলোড করা হয়েছে, তার লিস্ট থেকে প্রয়োজনীয় আপডেটটি সিলেক্ট করে রিমুভ করা। কোন আপডেট কবে ইন্সটল করা তা দেখে সহজেই লেটেস্ট আপডেট কোনটি তা বুঝা যায়।
অথবা
কন্ট্রোল প্যানেল> উইন্ডোজ আপডেট এ গিয়ে ভিউ আপডেট হিস্টরিতে যেয়ে, সেখান থেকে ইন্সটলড আপডেট-এ ক্লিক করেও কাজটি করতে পারে।
০৫৷ প্রশ্নঃ হার্ডওয়্যার আপডেটিং জনিত সমস্যার সমাধান৷
উত্তরঃ উইন্ডোজের আপডেটিং-এর মাধ্যমে অকেজো হার্ডওয়্যারের ড্রাইভার ডাউনলোড করে তা যেমন সচল করা যায়, তেমনি উল্টোটাও হতে পারে। আপডেট করার পর দেখা, যে ডিভাইসটি আর কাজ করছে না৷ তখন কি করতে হবে এখন-
কম্পিউটারে রাইট ক্লিক করে প্রোপার্টিজ> ডিভাইস ম্যানেজারে যেয়ে, এক্সপিতে মাই কম্পিউটারে রাইট ক্লিক তারপর প্রোপার্টিজ> হার্ডওয়্যার> ডিভাইস ম্যানেজার। যে ডিভাইসটি সমস্যা করছে সেটিকে এক্সপান্ড করে রাইট ক্লিক করে প্রোপার্টিজ> ড্রাইভারে যেয়ে, রোল ব্যাক ড্রাইভার অপশন দেখে, তা সিলেক্ট করলে কাজ হয়ে যাবে। তবে সব সময় এই অপশনটি পাওয়া যায় না।
এবার এতে কাজ না হলে, একই ড্রাইভার ট্যাব থেকেই আনইনস্টল সিলেক্ট করে, আবার নতুন করে আগের ড্রাইভার ইন্সটল করা।
আর পরামর্শ হচ্ছে, যদি ডিভাইসটি ঠিক মতো কাজ করতে থাকে, তাহলে একমাত্র গ্রাফিক্স কার্ড বাদে কোনোটাই ড্রাইভার আপডেট করা থেকে বিরত থাকা। অনাকাঙ্খিত ঝামেলা থেকে রেহাই পাবে এতে।
০৬৷ প্রশ্নঃ উইন্ডোজ সেটাপের সময় সিডি ড্রাইভ পাওয়া যাচ্ছে না৷
উত্তরঃ এক্সপি সেটাপের সময় কম্পিউটার সিডি ড্রাইভ খুঁজে না পেলে সম্ভব হলে অন্য কোনো পিসি থেকে হার্ডওয়্যার কম্প্যাটিবল লিস্টে
http://www.microsoft.com/hcl
গিয়ে কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার সমূহ এক্সপি সাপোর্ট করবে কি না তা নিশ্চিত হয়ে নিয়া৷ অনেক হার্ডওয়্যার এক্সপি সঠিক ভাবে সাপোর্ট করে না বিধায় সেগুলো ডিটেক্টও না করতে পারে। এডভান্সড অপশনে গিয়ে, সিডির ফাইলকে প্রথমে হার্ডডিস্কে কপি করে নিতে পারে। নতুবা পুরাতন সিডি রম পরিবর্তন করা ছাড়া কিছুই করার থাকবে না।
তবে উইন্ডোজ ভিসতা বা সেভেনে এই ধরণের সমস্যা সাধারণত দেখা যায় না।
০৭৷ প্রশ্নঃ উইন্ডোজ সেটআপ সিডি কাজ করছে না৷
উত্তরঃ সিডিরম বা ডিভিডিরম ঠিক মতো আছে কি-না দেখে নিয়া।
প্রয়োজনে সিডিরমটি ক্লিন করে নিয়া।
ইন্সটলেশন সিডিটিতেই সমস্যা থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে অন্য ইন্সটলেশন সিডি দিয়ে চেষ্টা করে দেখা।
০৮৷ প্রশ্নঃ উইন্ডোজ সেটআপ হচ্ছে না৷
উত্তরঃ যদি সেটাপ সিডি কপি হবার পর পিসি রিস্টার্ট দেয় এবং ইন্সটল হতে গিয়ে আটকে যায়, তাহলে এটি সিডির ফাইল কপিতে সমস্যার কারণেও হতে পারে। আবার শুরু থেকে শুরু করা। আবারও আটকেছে? তাহলে বুঝতে হবে হার্ডওয়্যার গত সমস্যা এটি সম্ভবত র‌্যামের। র‌্যামের স্লট পরিবর্তন করে দেখা৷ একাধিক বাস স্পিডের র‌্যাম লাগানো থাকলে একই স্পিড বিশিষ্টটি রেখে বাকি গুলো খুলে ফেলা। এক্ষেত্রে নতুন সেটআপ করার সময় সিডি থেকে বুট করে ফাইল কপি করতে হবে না। কিছুই করতে হবে না। শুধু বসে থেকে পিসিকে নিজের মতো চলতে দিয়া। আগের বার কপি করা ফাইল দিয়েই কাজ চলবে।
০৯৷ প্রশ্নঃ পিসি বারবার রিস্টার্ট হচ্ছে৷
উত্তরঃ অনেক সময়ই এই সমস্যা দেখা যায়। কাজের সময় যখন তখন পিসি রিস্টার্ট হচ্ছে। অথবা, উইন্ডোজ লোড হয়েই আবার রিস্টার্ট করছে। বিভিন্ন কারণে এই সমস্যা হতে পারে৷ কারণ গুলো-
সাধারণত ভাইরাস আক্রমণের কারণে এমনটি হয়। তাই এন্টিভাইরাস ইন্সটল করে পিসি স্ক্যান করা। তাতেও কাজ না হলে উইন্ডোজ ইন্সটল ছাড়া গতি নেই।
ইন্টারনেট অপরিচিত মেইল, এটাচমেন্ট, মেসেজ ওপেন করা থেকে বিরত থাকা। কারণ এভাবেই ভাইরাস বেশি ছড়ায়।
র‌্যামের সমস্যা বা ভিন্ন ভিন্ন বাস স্পিডের র‌্যাম থাকলে এমনটি হতে পারে। একই বাস স্পিডের র‌্যাম সব সময় ব্যবহার করা।
মাঝে মাঝে কোনো সফটওয়্যার ইন্সটলেশনের কারণেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। কাজেই এই সমস্যা করার আগে কোন কাজটি করে ছিলেন। মনে থাকলে সেটি রিমুভ করে ফেলা।
পিসিতে নতুন সংযুক্ত কোনো হার্ডওয়্যার কনফ্লিক্টের কারণেও এটি হতে পারে। এমতাবস্থায় হার্ডওয়্যারটি খুলে ড্রাইভার আনইন্সটল করা।
সিপিইউর যন্ত্রাংশে ধুলাবালি জমেও এমনি হতে পারে। তাই নিয়মিত কম্পিউটার পরিষ্কার রাখা ও যতটা সম্ভব শুষ্ক ঠান্ডা স্থানে রাখা।
বায়োসে সিপিইউ ফ্যানের প্রোফাইলে সমস্যার কারনেও এটা হতে পারে। হয়তো ফ্যান প্রোফাইল সাইলেন্ট করে রাখা, এ কারনে দরকারি হেভীওয়েট কাজের সময় সিপিইউ পর্যাপ্ত তাপ নির্গমন করতে না পেরে পিসি রিস্টার্ট নেয়। এক্ষেত্রে বায়োসে গিয়ে ফ্যান প্রোফাইল ইন্টিলিজেন্ট বা টার্বো করে দিয়া।
আর ভোল্টেজ উঠানামার কারণেও এমনটা হতে পারে। এজন্য ইউপিএস ব্যবহার করা।
১০৷ প্রশ্নঃ কম্পিউটার ব্যবহারে সতর্কতা৷
উত্তরঃ
• চলন্ত অবস্থায় সিপিইউতে ঝাঁকুনি না দেয়া৷ এতে বিদ্যুতিক শক লাগতে পারে কিংবা হার্ডডিস্ক ও অন্যান্য কম্পোনেন্টে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
• স্পিকার অথবা ইউপিএস মনিটরের কাছা কাছি না রাখা। এতে বিদ্যুৎ চুম্বকীয় বাধার সৃষ্টি হতে পারে।
• পিসি চালু রেখে কিছু পান না করা বা ধুমপান না করা। কারণ তরল কী-বোর্ডে পড়ে যেতে পারে অথবা ধোঁয়ার ক্ষুদ্র কণিকা ঢুকে পড়তে পারে কম্পিউটারে।