Sunday 18 March 2018

ফুসফুসের ক্যান্সারের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার কি?

শ্বাসতন্ত্রের যাবতীয় রোগের মধ্যে ফুসফুসের ক্যান্সার সবচেয়ে মারাত্মক রোগ। তবে ফুসফুসের ক্যান্সার প্রতিরোধ-যোগ্য অসুখ।

কারণ:
  • ধূমপান (শতকরা ঌ০ ভাগ ফুসফুসের ক্যান্সারের জন্য দায়ী)। তাই ধূমপান কমালে ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়ার হারও কমে যাবে। মেয়েদের সিগারেট খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার জন্য তাদের ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার হার ক্রমেই বাড়ছে। একজন অধূমপায়ী অপেক্ষা একজন ধূমপায়ীর ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়ার ভয় থাকে ৪০ গুণ বেশি। যে যত বেশি ধূমপান করে তার তত বেশি ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়ার ভয় থাকে। ধূমপায়ীদের সঙ্গে যারা চলাফেরা করে তাদেরও ফুসফুসে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। স্বামী অথবা স্ত্রী একজন ধূমপায়ী হলে অন্যজনের ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়।
  • পরিবেশ দূষণ।
  • কলকারখানার দূষিত পরিবেশ৷ কিছু কিছু কলকারখানার শ্রমিকদের মধ্যে ফুসফুসের ক্যান্সার পরিলক্ষিত হয়। অ্যাসবেসটস কারখানায় যারা কাজ করে তারা অধিক হারে ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। ধূমপায়ীরা ফুসফুসের ক্যান্সারে বেশি আক্রান্ত হয়।
লক্ষনঃ
ফুসফুসের ক্যান্সারের প্রধান উপসর্গ তিনটি কফ, কফের সঙ্গে রক্ত যাওয়া এবং শ্বাসকষ্ট।
কাশি ও কফ: কফ এ ধরণের ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ। কফ প্রথমে শুষ্ক থাকে কিন্তু পরবর্তীকালে তা গাঢ় হয়ে যায়। যারা নিয়মিত ধূমপান করে তাদের কফের আওয়াজ অথবা গতি-প্রকৃতি যদি হঠাৎ বদলে যায় তবে বুকের এক্স-রে করা উচিত। ৪০ বছর বয়সের বেশি কারও যদি হঠাৎ করে কফ হয় আর তা দীর্ঘ দিনেও যদি সারতে না চায় তবে ভালোভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা উচিত।
কাশির সাথে রক্ত পড়া: হিমোপটেসিস বা কফের সঙ্গে রক্ত যাওয়া ফুসফুসের ক্যান্সারের আরেকটি প্রধান উপসর্গ। সাধারণত কফের সঙ্গে একটু একটু করে রক্ত যায়। তবে ফুসফুসের ভেতর কোনও বড় শিরা বা ধমনি ছিঁড়ে গেলে মারাত্মক রক্তপাত থেকে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
শ্বাসকষ্ট হয় : অনেক কারণে ফুসফুসের ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর শ্বাসকষ্ট হতে পারে। টিউমার ফুসফুসের চারদিকে ছড়িয়ে পড়ার জন্য, শ্বাসনালীতে চাপ দেওয়ার জন্য, ফুসফুসের চারদিকে পানি জমার কারণে, স্নায়ুতন্ত্র আক্রান্ত হওয়া ইত্যাদি কারণে ফুসফুসের ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
উল্লিখিত উপযুক্ত তিনটি উপসর্গ ছাড়াও অন্যান্য উপসর্গ নিয়ে রোগী ডাক্তারের কাছে আসতে পারে। বুকব্যাথা, গলার লসিকা গ্রন্থি বা গ্ল্যান্ড ফুলে যাওয়া, গলার স্বরে অস্বাভাবিক পরিবর্তন, জন্ডিস, হঠাৎ মূর্ছা যাওয়া , ফুসফুসের চারিদিকে পানি জমা, বমি ভাব থাকে, ওজন কমে যায়, খাবারে অরুচি থাকে ইত্যাদি উপসর্গ নিয়েও রোগী হাসপাতালে আসতে পারে।
প্রতিকার:
রোগী ধূমপায়ী ও ৪০ বছরের বেশি বয়স হলে এবং কোনো উপসর্গ দেখা দিলে (দীর্ঘদিন ধরে কাশি, কাশির সঙ্গে রক্ত পড়া) অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। দ্রুত রোগ ধরা পরলে যে অংশ ক্যান্সার আক্রান্ত হয়েছে তা কেটে বাদ দিয়ে রোগ নিরাময় সম্ভব। তাছাড়া কেমোথেরাপি এবং রেডিওথেরাপি দেওয়া যেতে পারে। ধূমপান ফুসফুসের ক্যান্সারের একটি প্রধান কারণ। তাই সিগারেট খাওয়া কমালে বা বাদ দিলে ফুসফুসের ক্যান্সারের হারও কমবে।